কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আটক এক মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় এমপি ভাতিজারা পুলিশ সদস্যদের আটকে রেখে মারধর করেছে। এ কথা জানিয়ে পুলিশ বলছে, এ হামলায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ৩ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডিবির উপর হামলায় নেতৃত্ব দেয় কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের এমপি ও উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরীর দুই ভাতিজা। এই দুই অভিযুক্তের আরেকজন চাচা দৌলতপুর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত রোববার গভীর রাতে চড়দিয়াড় এলাকায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি দল মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। এসময় ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ জুয়েল রানা নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করে তারা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উদ্ধার করা মাদক ও আসামিকে ছিনিয়ে নিতে কারবারিরা পুলিশের উপর হামলা চালায়।
পুলিশ সূত্র জানায়, হামলাকারীরা ৩ পুলিশ সদস্যকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। পরে গত সোমবার রাতে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর দুই ভাতিজা উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাকুন্ডি গ্রামের মৃত রবিউল চৌধুরীর ছেলে তুষন চৌধুরী ও মিন্টু চৌধুরীর ছেলে আরজু চৌধুরীসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই আলহাজ আলী। মাদক উদ্ধার ও আটকের ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে।
পৃথক মামলায় উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি আশ্রয়ণ এলাকার আব্দুল লতিফ দফাদারের ছেলে জুয়েল রানা, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একই ইউনিয়ন চড়দিয়াড় এলাকার ছামিউল লস্করের ছেলে রনি ইসলাম ও মো. মান্না লস্কর এবং মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার মাহমুদ রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, মামলার ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, আমাদের ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে এমপি রেজাউল হক চৌধুরী ও দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর বক্তব্য নেয়ার জন্য বারবার তাদের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলেও তারা তা ধরেননি।
টিএইচ